কপ ২৪ জলবায়ু সম্মেলনে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভ‚মিকার প্রত্যাশা নাগরিক সমাজেরদায়ী দেশগুলোর কার্বন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে বাংলাদেশকে দাবি তুলতে হবে
ঢাকা, ১৩ নভেম্বর ২০১৮। আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে আসন্ন কপ ২৪ জলবায়ু সম্মেলনে জাতীয় স্বার্থে দৃঢ় ভূমিকা পালনের জন্য সরকারের প্রতি অঅহŸান জানিয়েছে অধিকার ভিত্তিক ১০টি নাগরিক সমাজ সংগঠন। তাঁরা আরও বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য এই জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোর অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশকে কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণের একটি আইনী বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করার জন্য জোরালো অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। “কপ ২৪ জলবায়ু সম্মেলন: প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা ” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
ইক্যুইটিবিডির রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন একই প্রতিষ্ঠানের সৈয়দ আমিনুল হক। পল্লী কর্ম সহায়ক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি কাজী খলিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাসান মাহমুদ এমপি। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এসএম মঞ্জুরুল হান্নান খান। এতে অরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমরিটাস আইনুন নিশাত, ফেডারেশন অব এনভায়রনমেন্টাল জার্নালিস্ট-এর কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফেডারেশনের মো. পোথার হোসেন, প্রকাশ-এর টিম লিডার জেরি ফক্স, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুডের জিয়াাউল হক মুক্তা এবং পিআরডিআই-এর প্র্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, আসন্ন কপ ২৪-এ প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্যারিস রুল বুক গ্রহণ করা হবে, তাই এই সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ, প্রযুক্তি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে যথাযথ আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং সুবিধা যেন বাংলাদেশ পায় এই রুল বুকে তা অন্তর্ভুক্তির জন্য সম্মেলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনের সফলতা নিয়ে আসলে সন্দেহ আছে, কারণ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও নেপথ্যের অনেক রাজনীতি এর মূল নিয়ামক হয়ে দাঁড়াবে। আমাদেরকে তাই নিজস্ব সক্ষমতার উপর নির্ভর করে তৈরি হতে হবে, বাইরের সহায়তা আসলে ভাল।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু আলোচনায় সরকারের অবস্থানে সুশীল সমাজ সংগঠনের মতামত প্রতিফলিত করতে হলে তাদের বক্তব্য শুনতে হবে। কোনও কারণে এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সমন্বয়ের প্রক্রিয়াটি শক্তিশালী করার উদ্যেগ নিতে হবে। আসন্ন কপে সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়তার বিষয়টি তুলে ধরার জন্যও তিনি পরামর্শ দেন।
বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমাগতভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে ধনী দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণে গুরুত্ব দিয়ে ড. হাসান মাহমুদ এমপি বলেন, কার্বন কমানোর যে প্রতিশ্রæতি দেওয়া হয়েছে, সবগুলো দেশ সেই প্রতিশ্রæতি পালন করলেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাবে ৩ ডিগ্রি হারে। এরপরেও প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে ধনী দেশগুলোর অস্পষ্ট ভ‚মিকায় আমরা হতাশ। এ অবস্থার পরিবর্তনে নাগরিক সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. এসএম মঞ্জুরুল হান্নান খান বলেন, জলবায়ু আলোচনায় সব সময়ই বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে আসছে, এই আলোচনায় সবসময়ই বাংলাদেশের সরকার এবং সুশীল সমাজ সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে অবদান রাখছে, এটা আমাদের একটি শক্তির জায়গা। এ বছরও আমরা সরবকারের অবস্থান প্রকাশ করবো এবং আলোচনা প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবো।