চট্টগ্রাম থেকে মিজানুর রহমান:
চট্টগ্রামে প্রতিবাদী ছাত্রনেতা আজ সন্ত্রাসী
এরশাদ পতনের পর থেকে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি কলুষিত হয়ে গেছে। ছাত্র রাজনীতির নামে এখন যা হচ্ছে, তাতে এটা বন্ধ করে দিলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু রনি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ছাত্রনেতাদের এখনও ছাত্রদের জন্য, সমাজের জন্য অনেককিছুই করার আছে।
বাংলাদেশ প্রত্যেকটি জেলায় যখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কর্মকান্ড প্রশ্নের সম্মুখীন, সেখানে নুরুল আজিম রনি চট্টগ্রামের রাজপথের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর।
রনী উজ্জ্বলতম ব্যতিক্রম। সাড়ে ৪ বছর দায়িত্ব পালনের পর চট্টগ্রাম মহানগরের মত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকের পদ যখন অভিমান করে ছাড়লেন; তখন তার সঞ্চয় ৫টি মামলা আর দুই বছরের সাজা। রনি রাজনীতি করে বাপের টাকায়।
রনির সর্বশেষ ঝামেলা কিন্তু এই বাপের টাকা নিয়েই। এক বন্ধুর সাথে ব্যবসা করতে গিয়েছিলেন। এখন সেই বন্ধু টাকাও দেয় না, ব্যবসার হিসাবও দেয় না। ক্ষেপে গিয়ে রনী তাকে চড় মেরেছেন; একটি-দুটি নয়, গুনে গুনে ১৩টি । যত রাগই হোক, কারো গায়ে আপনি হাত তুলতে পারেন না। এটা অন্যায়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
রেগে গিয়ে রনি হেরে গেলেন। পদ ছেড়ে দিয়ে এখন তাকে সেই বন্ধুর করা মামলায় আদালতের বারান্দায় সময় কাটাতে হবে।
গণমাধ্যম যে কিভাবে একটি ভালো ছেলেকে সন্ত্রাসী বানিয়ে ফেলতে পারে, রনি তার উদাহরণ হয়ে থাকবে।
মজাটা হলো রনির বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ, তার সবই সত্যি। এর আগে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষকে মারধোর করেছেন, সেটাও কিন্তু সত্যি।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাথাপিছু পাঁচ হাজার করে টাকা আদায় করা হয়েছিল। কলেজের অধ্যক্ষ সেই বাড়তি ফি ফিরিয়ে দিতে গাইগুই করছিলেন। তাই রনি তাকে কিলঘুষি মেরেছেন। আর একজন অধ্যক্ষের গায়ে হাত তোলা তো মহা অন্যায়। এখন তাকে আইনী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
কিন্তু মজাটা হলো রনির বিরুদ্ধে হয়েছে চাঁদাবাজীর মিথ্যা মামলা। তিনি নাকি অধ্যক্ষের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিলেন।
একবার ভেবে দেখুন আমরা কত নিচে নেমে গেছি। যে দল দাবি করেন তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল, সেই দলের ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তাও আবার আমার জানা মতে বাংলাদেশে ছাত্রলীগের সবথেকে জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা চট্টগ্রামের।
যেই নেতা আজ চট্টগ্রামের সাধারণ জনগণের চোখে অন্যায়ের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, যে জনগণের জন্য বর্তমান এমপি সাহেব কে খেলার মাঠ বন্ধ করে সুঁইমিং পূল তৈরি করতে বাধা দিয়ে আলোচনা এসেছে।
চট্টগ্রাম এর সাধারণ ছাত্রদের পাসে দাঁড়িয়েছে, এমন একজন নেতাকে শুধুমাত্র ফেসবুকের একটা ফুটেজ দেখে, বিচার বিবেচনা না করে, দোষী বলে দিলেন? শীবির বলে দিলেন? ভেবে দেখুন সাধারণ জনগন কতটা কষ্টে আছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলেই যদি ছাত্রলীগ নেতা শীবির হয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী?
প্রভাশ আমিন ভাই এর লেখা দেখে আর না লিখে পারলাম না। সব ঝূঁকি জেনেই আমিও রনির পাশে দাঁড়াচ্ছি।
একটি ভালো ছেলেকে হারিয়ে যেতে দেয়া যায় না। চট্টগ্রামবাসী রনিকে হারাতে চাই না।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় আমরা একটা করে রনিকে দেখতে চাই।
MD MIZANUR RAHMAN