ঢাকা, ১ জুলাই;
শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নয়, রাজাকার-আলবদরসহ স্বাধীনতা বিরোধিদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছিলেন, আমরাও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের নির্মূল করতে সা¤প্রতিক বাস্তবতার ভিত্তিতে ৬ দফা দাবী উত্থাপন করেছি।
নৌপরিবহন মন্ত্রী এবং শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এর আহবায়কশাজাহান খান আজ ঢাকায় সেগুনবাগিচাস্থ স্বাধীনতা হলেজামাত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সরকারী চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা এবং তাদের সন্তান ও উত্তরসূরিদের সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ না দেয়াসহ ৬ দফা দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
শাজাহান খান বলেন, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার অবৈধভাবে চাকুরী দিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, জামাত-শিবির ও রাজাকারের সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা এখন চক্রান্ত চালাচ্ছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে, দেশের সকল উন্নয়নের বিরুদ্ধে। তাই দেশের অব্যাহত উন্নয়ন এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার স্বার্থেই আমরা ৬ দফা দাবি উত্থাপন করছি।
নৌপরিবহন মন্ত্রী ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন করে জামাত শিবির রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধীদের এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল বিএনপির হিংস্র থাবা থেকে দেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানান। তিনি বলেন, আদর্শহীন মেধা, আদর্শহীন রাজনীতি ও আদর্শহীন রাষ্ট্র পরিচালনা দেশ ও জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। আমাদের আদর্শ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, আমাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধর চেতনা। বাঙ্গালি জাতির এটাই মূলকথা।
শাজাহান খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুট করেছিলো তারা এবং তাদের অনুসারীরাই প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা কোনমতেই যুদ্ধাপরাধ জামাত-শিবির এবং তাদের রক্ষাকারী বিএনপি ও তাদের সহকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে দেবনা। এটাই হলো আমাদের দৃপ্ত শপথ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, সালাহউদ্দি আহমেদ, ওসমান আলী, এবিএম সুলতান আহমেদ, আলাউদ্দিন মিয়া,আসাদুজ্জামান দুর্জয় এবং আবুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ এর ৬ দফা দাবিসমূহ নি¤œরুপঃ
১। জামাত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান ও তাদের উত্তরসূরিদের সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ দেয়া বন্ধ করা হোক।
২। জামাত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধী যারা সরকারী চাকুরীতে বহাল আছে তাদের তালিকা করে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হোক।
৩। যুদ্ধাপরাধীদের সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ও জামাত-শিবির স্বাধীনতা বিরোধীদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হোক।
৪। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুন্নকারি, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের ‘হলোকাষ্ট এ্যাক্ট বা জেনোসাইড ডিনায়েল ল’ এর আদলে আইন করে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিচার করা হোক।
৫। ২০০১, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা গণহত্যা ধর্ষন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে এবং যারা আগুন সন্ত্রাসকে সমর্থন করেছে, স্পেশাল ট্রাইবুনাল গঠন করে তাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হোক।
৬। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ছাত্র হত্যার গুজব ছড়িয়ে যারা উস্কানি দিয়েছে এবং যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র বাড়ী অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেয়া হোক।
উল্লেখিত ৬দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশব্যপী জনসচেতনতা ও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতেশ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ নিম্নেবর্ণিত কর্মসুচী প্রণয়ন করেছে।
২ জুলাই ২০১৮ সোমবার বিকাল ৪ টায়, ঢাকায় বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, ২৮ রাজউক এভিনিউস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
পাতা-২
৫ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায়, রাজধানীর মতিঝিলস্থ ব্যাংক বীমাসহ সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও ৬ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ।
৮ জুলাই ২০১৮ রবিবার সকাল ১০ টায়, মতিঝিলে শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের গনজমায়েত ও প্রেসক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা।
১৪ জুলাই ২০১৮ শনিবার সকাল ১০ টায়, মহানগর নাট্যমঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সভা।
১৯ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায়, স্বাধীনতা বিরোধি অপশক্তিকে প্রতিরোধকল্পে জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে জনতার অভিযাত্রা শুরু।
২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার সকাল ১০ টায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউট-এ শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের প্রতিনিধি সভা।
(মোঃ জাহাঙ্গীর আলম খান)
সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
০১৭১১৪২৫৩৬৪