যুক্তরাষ্ট্রের আছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। এর পরেই বিশ্বে সামরিক শক্তির দিক দিয়ে দুই, তিন ও চার নম্বরে আছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ২০১৭-তে এসব কথা বলা হয়েছে। বিশ্বের ১৩৩টি দেশের মধ্যকার নানা তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই ওই তালিকা করা হয়।
গত শুক্রবার সূচকটি প্রকাশ করা হয়। ১৩৩টি দেশের সামরিক শক্তি বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা করা হয়েছে। শুধু অস্ত্রের ক্ষমতা নয়, ৫০টি বিষয়ের ভিত্তিতে তালিকাটি করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তির মতো কৌশলগত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নে ভৌগোলিক বিষয়াদি, প্রাকৃতিক সম্পদ ও স্থানীয় শিল্প বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া দেশের জনসংখ্যার বিষয়টিও তালিকা প্রণয়নে প্রভাব ফেলেছে। যে দেশের জনসংখ্যা যত বেশি, সে দেশের সামরিক বাহিনীতে লোকবল তত বেশি। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার সূচক তৈরির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চারপাশে ভূখণ্ড থাকায় কিছু দেশের নৌবাহিনী নেই। তবে এ বিষয়টি তালিকা প্রণয়নে কোনো ভূমিকা রাখেনি।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ডট কমে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের মোট ১৩৩টি দেশের ওপর ওই তালিকা করা হয়। চীনের বাজেট ১৬ হাজার ১৭০ কোটি ডলার, ভারতের ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার ও পাকিস্তানে ৭০০ কোটি ডলার। এই হিসাবে ভারতের চেয়ে অনেকে পিছিয়ে আছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। কাশ্মীরসহ নানান ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা পাকিস্তান সামরিক শক্তির দিক দিয়ে বিশ্বে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে। আর মিয়ানমার ৩১তম অবস্থানে রয়েছে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সে বলা হয়, তালিকার শীর্ষ ১৫টি দেশের মধ্যে আছে ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ইসরায়েল। তবে প্রতিবেদনে কোনো দেশের স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স, যেমন পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
গ্লোবালফায়ারপাওয়ার ডটকমে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চীন, ভারত, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বরাদ্দ পেয়েছে যথাক্রমে ১৬ হাজার ১৭০ কোটি ডলার, ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার, ২৪০ কোটি ডলার ও ৭০০ কোটি ডলার।
সেনাসংখ্যা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্য ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৫ জন, চীনে ৩৭ লাখ ১২ হাজার ৫০০ জন, ভারতের ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ জন, পাকিস্তানে ৬ লাখ ৩৭ হাজার এবং বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার সক্রিয় রয়েছে।
এয়ারক্রাফট
যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারক্রাফট আছে ১৩ হাজার ৭৬২, চীনের ২ হাজার ৯৫৫টি, রাশিয়ার ৩ হাজার ৭৯৪টি, ভারতের ২ হাজার ১০২টি, পাকিস্তানে ৯৫১টি এবং বাংলাদেশের আছে ১৬৬টি।
ট্যাংক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে আছে মোট ৫৩৪টি ট্যাংক। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে ৫ হাজার ৮৮৪টি, চীনের আছে ৬ হাজার ৪৫৭টি ট্যাংক। ভারতের আছে ৪ হাজার ৪২৬টি ও পাকিস্তানের ২ হাজার ৯২৪টি ট্যাংক আছে। এ ছাড়া ৯৪২টি সশস্ত্র সাঁজোয়া যান, ১৮টি স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান, ৩২টি রকেট প্রজেক্টর রয়েছে বাংলাদেশের।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের কাছে আছে মোট ৮৯টি ‘নেভাল এসেট’। এ ছাড়া ৬টি ফ্রিগেট, ৪টি কভেটিস, ২৮টি পেট্রোল ক্রাফট, ৫টি মাইন ওয়ারফেয়ার ভেসেল। বাংলাদেশের কাছে কোনো বিমানবাহী ক্যারিয়ার, ডেস্ট্রয়ার বা সাবমেরিন নেই বলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সাবমেরিন আছে।
এতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের কাছে নেই কোনো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। তা ছাড়া তাদের হাতে আছে ১০টি ফ্রিগেট, আটটি সাবমেরিন, ১৭টি পেট্রোল ক্রাফট। এ ছাড়া আছে আরও প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম।